পরের এক সপ্তাহ যে কিভাবে কেটেছে তোমাকে আমি তা বোঝাতে পারবো না। প্রতিটা মূহুর্ত এক অনাগত মিলনের অপেক্ষায় উন্মূখ থেকেছে আমার প্রতিটা অনু-পরমাণু। আমার চেতনা আমাকে তাড়িয়ে নিয়ে গেছে বারবার সাত দিন পরের সেই মূহুর্তের কাছে যার সঠিক রূপ আমার জানা নাই। কল্পনা আমাকে বারবার নতুন নতুন রূপ দেখিয়েছে অনাগত দিনগুলোর। সবার সাথে মেশার এবং কথা বলার পরেও সবার মনে হচ্ছিল আমি যেন কাছে নাই; কোন এক সূদুর থেকে কথা বলছি। কারো কোন কথাতেই ভালমতো মনযোগ দিতে পারছিলাম না, কোন কাজও
মনযোগ দিয়ে করতে পারি নি।একদিন ছাত্রের মা, অর্থাৎ লজিং মিস্ট্রেস আমাকে কথাটা বলেই ফেলল। সেদিন সন্ধ্যার পরে ছাত্রদেরকে পড়াতে বসেছি এমন সময় চাচী আসলো রূমে। আগেও অনেকবার এসেছে এবং বিভিন্ন কথা-বার্তা বলেছে। বেশীর ভাগই সাংসারিক কথা-বার্তা। ছেলে-মেয়েদের সম্পর্কে বলেছে, সংসারের অবস্থা সম্পর্কে বলেছে, নিজের অসুখের কথা বলেছে। এমনকি তার প্রতি, বিশেষ করে তার অসুখের চিকিৎসার ব্যাপারে কর্তার অনীহার ব্যাপারে বার বার বলেছে।
আমি আগেই বলেছি আমার লজিং মাষ্টারের অর্থনৈতিক অবস্থার কথা। ফ্যামিলি স্ট্যাটাসও তার সাথ্যে সামঞ্জস্যশীল অবশ্যই। টিচারের কাছে দুইটা ছেলেকে পড়াতে খরচ বেশী হবে বিধায় বাড়িতে লজিং রাখা।
যাই হোক, চাচী আমাকে সরসরিই প্রশ্নটা করল, এবার বাড়ী থেকে আসার পর থেকেই দেখছি তোমার মধ্যে কেমন একটা উচাটন উচাটন অবস্থা। কি হয়েছে তোমার?
আমার লজিং মাষ্টার এবং লজিং মিস্ট্রেস দুজনই পশ্চিম বাংলার বাংলায় কথা বলে। যদিও পশ্চিম বাংলা ছেড়েছেন কয়েক যুগ হয়ে গেছে। শুনতে বেশ ভাল লাগে তাদের কথা। সব কিছুতে ‘ছ’-এর উচ্চারনের প্রাধান্য। ছেলে-মেয়েগুলোর কথায় দুই বাংলার মিশ্রণ খুব ভালমতো পরিলক্ষিত হয়।
আজ আমাদের শিক্ষিত সমাজ যখন আমাদের নিজেদের সবকিছুকে অন্যের ছাঁচে ঢেলে সাজাতে চাচ্ছে, তখন অর্ধ শিক্ষিত এই দুই নারী পুরুষ যে যুগ যুগ ধরে তাদের নিজেদের করে পাওয়া উচ্চারণকে আকড়ে ধরে আছে এই প্রতিকুল পরিবেশে, যেখানে তাদের মতো করে কথা প্রায় কেউই বলে না, তা দেখে আমার শ্রদ্ধা হয় তাদের প্রতি। যা আমার তাকে আমার করে রাখার মধ্যেইতো গর্ব।
আমার ভাবতে সত্যিই খুব কষ্ট হয় যে, যা কিছু আমাদের নিজেদের তার সবকিছুর প্রতিই যেন একটা উন্নাসিকতা। বিশেষ করে আমাদের এক শ্রেণীর শিক্ষিত সমাজের। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতির কথা যদি সামনে আনো তবে এর চিত্রতো অত্যন্ত ভয়াবহ। আমাদের যা কিছু তা প্রায় বিলুপ্তির পথে, অন্যেরগুলোকে আমাদের করতে উঠে পড়ে লেগে গেছে। ধর্মের কথা যদি বলো, যদিও ধর্ম আমাদের সংস্কৃতিরই বড় একটা অংশ, তবে তাদের মুখে শুনতে পাবা নিজের বাপদাদার ধর্মের অনেক ত্রুটি, যারপর নাই অনিহা এবং ক্ষেত্র বিশেষে বিরোধীতা। ভাষার ব্যাপারে এসো- বাংলা একটা স্বতন্ত্র ভাষা। এর বর্ণমালা, উচ্চারণ ভঙ্গি সবকিছুই আলাদা অন্য সব ভাষা থেকে। কিন্তু আজ শিক্ষিত সমাজের একাংশ বাংলাকে ইংলিশ উচ্চারণের সাথে এমনভাবে মিলানোর প্রচেষ্টায় রত মনে হয় যে বাংলার আসল রূপই চেঞ্জ হওয়ার উপক্রম তাদের দ্বারা। ‘র’ আর ‘ড়’ এর সঠিক উচ্চারণ ওরা হয়তো জানেই না অথবা জেনে শুনেই ইংলিশ স্টাইলে উচ্চারণ করার চেষ্টা করে। এর কখনো কখনো এ দুইয়ের উচ্চারণে কোন পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না তাদের মুখে, আবার কখনো কখনো ‘র’ এর উচ্চারণ করে ‘ড়’ এর মতো করে আর ‘ড়’ এর উচ্চারণ করে ‘র’ এর মতো করে।
‘য’ আর ‘জ’ এর উচ্চারণে কি পার্থক্য তা জানার কোন সুযোগই কোনদিন কোন ছাত্রের হয় না স্কুল থেকে। ‘ড়’ আর ‘ঢ়’ এর উচ্চারণে ভিন্নতা সম্পর্কে অনেকের ধারণাই নাই। ‘ঋ’ আর ‘হৃ’ এর উচ্চারণ আজ এক হয়ে গেছে প্রায় সবার কাছে। মনে হয় সবাই যেন ‘হৃদয়’কে ঋদয় করেই হৃদয়ে নিয়ে নিয়েছে।
না, বেশী বললে তুমি আবার চিন্তা করবা, ক্লাশ নেয়া শুরু করে দিলাম কিনা। তবে একটা কথা তোমাকে স্মরণ করিয়ে দেয়াই উচিৎ বলে মনে করি- নিজের যা আছে তাকে হৃদয়ে লালন করে তার সঠিক রূপে তাকে যতদিন পর্যন্ত ভালবাসতে না শিখবো ততদিন পর্যন্ত আমাদেরকে এ গলি ও গলিতে ঘুরে ঘুরেই ফিরতে হবে, সম্মানজনক অবস্থানে পৌছতে পারবো না।
চাচীর কথার জবাবে আমি বললাম, না চাচি, আমিতো ভালই আছি। বাড়িতেও সব আগের মতোই আছে- নতুন কিছু হয় নি।
না হলেই ভাল। আগের মতো প্রাণ খুলে কথা বলো না, কথায় কথায় হাসো না- আগের মতো। কেমন যেন গম্ভীর হয়ে থাকো সব সময়। সারাদিন কেমন একটা চিন্তা যেন মনে নিয়ে চলো- এরকম মনে হয়। চাচী বলল।
আলহামদুলিল্লাহ; আমি ভাল আছি চাচি। আমার জন্য দোয়া করবেন। মুরুব্বীদের দোয়া একটা বড় জিনিস। এতদিন মেসে ছিলাম, আপনি আজ যে কথাটা জিজ্ঞেস করছেন, বা যে জিনিসটা অনুভব করেছেন সেটা বলার মতোওতো কাউকে পাই নি। আমার মনে দুঃখ থাক অথবা না থাক, আপনি যে অমনভাবে দেখার চেষ্টা করেছেন সেটা আমার জন্য অনেক বড়। আপনি একটা মমতাবোধ থেকেই এমনটি অনুভব করেছেন আমি বুঝতে পারছি। তাই আপনার কাছে দোয়া চাওয়ারও অধিকার আমার হয়েছে বলেই আমার বিশ্বাষ। সেই বিশ্বাষ থেকেই বলছি।
তুমি যেদিন থেকে এসেছো আমাদের বাড়িতে সেদিন থেকেই আমরা তোমাকে আমাদেরই একজন মনে করে নিয়েছি। আমরাতো বাপু তোমাদের মতো বা অন্য সবার মতো অত বড় মানুষ না, তাই আমরা আমাদের মতো করেই চলি এবং ভাবি। আমরা মনে করি বাড়িতে যদি কেউ থাকে, সে বাড়িরই একজন হয়ে যায়। তার যেমন উচিত বাড়ির সবার সাথে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নেয়া, আমাদেরও উচিত তার সুখ-দুঃখকে আমাদের করে নেয়া।
ঠিক বলেছেন চাচী। এই শিক্ষা মানুষ পরিবার থেকেই পায়। আপনার পরিবারে যে সমস্ত ছেলে-মেয়ে বড় হবে তারা আপনার মতো করেই চিন্তা করতে শিখবে। তারা যদি বড়দেরকে দেখে অন্যদেরকে শ্রদ্ধা বা শ্নেহ করতে, তারাও শিখবে মানুষকে শ্রদ্ধা করতে। আমাদের সমাজ জীবনে তার প্রভাব পড়বে। পরিবারে তার বিপরীত দেখলে তারাও ওভাবেই ভাবতে শিখবে এবং সমাজে তার প্রতিফলন হবে অমনই। আজ আমাদের সমাজে মানুষে মানুষে যে শ্রদ্ধাবোধ বা বিশ্বাষের এত ঘাটতি তার শিক্ষাক্ষেত্র আমাদের পরিবার। আমার ভাবতে সত্যিই ভাল লাগে যে, আপনার বাচ্চারা আপনাদেরই শিক্ষা গ্রহণ করেছে।
কথার মাঝখানে কখন যে বড় ভাবী অর্থাৎ এবাড়ির বড় ছেলের বৌ এসে দরজার কাছে দাঁড়িয়েছে আমি খেয়াল করি নি। বড় ছেলে ব্যাংকে চাকরী করে। দুইটা ছেলে নিয়ে তাদের সংসার। বড় ভাবী বলল, মাষ্টার দেখছি আজ অনেক জ্ঞানের কথা বলছেন?
আমি তার দিকে তাকালাম। বললাম, আপনি কখন এসেছেন? দেখি নিতো।
এইতো এখন; আপনাদের কথা শুনে এলাম।
আমি বললাম, ভিতরে আসেন, বসেন। জ্ঞানের কথা কিছুই না ভাবী- খুবই সাধারণ কথা। চাচী বলার সুযোগ করে দিল তাই কিছু সহজ এবং সত্যি কথা বলা হয়ে গেল।
3 comments:
Titanium joes - The Perfect Life Ideas
If you want to enjoy all of our unique recipes and ideas and gold titanium start tungsten titanium making your own, we are the perfect choice. Visit titanium sunglasses TITIAN JEAN JEAN JEAN JEAN JEAN titanium framing hammer JEAN JEAN JEAN JEAN black titanium fallout 76 JEAN JEAN
f678h1fjgao225 women sexy toys,sex chair,horse dildos,prostate massagers,double dildos,sex toys,Discreet Vibrators,male sexy toys,dildo y599f5ikglu346
k275q1gxvhd759 women sex toys,wolf dildo,dog dildo,horse dildo,couples sexy toys,love dolls,wholesale sex toys,dildos,sex toys l747g2uovjx537
Post a Comment